করোনা পরিস্থিতি
২০১৯ থেকে সারা বিশ্বে এক নতুন রোগ – করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯ – চীন দেশের জৈব গবেষণাগার থেকে ছড়িয়ে পড়েছে। অসুখের একটি ঢেউ শেষ হবার আগেই আর একটি ঢেউ আছড়ে পড়ছে। বোঝা যাচ্ছে এটি মৌসুমি রোগ নয়, এর জের বহু দিন অবধি সামলাতে হবে এবং হয়তো নির্মুল করা যাবে না। হাম, বসন্তের মতই একে সঙ্গে নিয়ে মানুষকে চলতে হবে। ভারতবর্ষের প্রথম ঢেউ সামলানো গিয়েছিল, কঠোর নিয়োন্ত্রনের মাধ্যমে। তার পরে রোগ বৃদ্ধি পেলো নিয়ন্ত্রন আলগা হয়ে যেতে এবং ভাইরাসের চরিত্র বদলে গেল বলে। পুনরায় আক্রান্তের সংখ্যা কমতে থাকছে; তৃতীয় ঢেউ আসবে তা নিশ্চিত। তা মোকাবিলা করার প্রচেষ্টাও শুরু হয়ে গেছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে, বহু জায়গায় লকডাউন হচ্ছে। আবার জীবনযাত্রাকে ক্ষতিগ্রস্থ করে সব সময় লকডাউনের মধ্যে থাকা সম্ভব নয়। আর ভারতবর্ষের অধিকাংশ লোকের অবস্থা দিন আনি দিন খাই – সুতরাং আরো সম্ভব নয়। কিন্তু আতঙ্কে হতাশ হয়ে যাওয়া অনুচিত। আমরা এই রোগকে নিয়ন্ত্রন করতে পারবো। আমাদের এখন দরকার সচেতনতার।
প্রথম গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো নিজেদের টিকাকরন করা। এই মুহূর্তে ভারতবর্ষে তিন প্রকার টিকা ব্যাবহার করা হচ্ছে, সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরী অ্যাস্ট্র্যাজেনেকার ভ্যাকসিন কোভিশিল্ড, ভারত বায়োটেকের তৈরী কোভ্যাকসিন এবং রাশিয়ার তৈরী স্পুটনিক।
১) কোভ্যাকসিনঃ ভারতে তৈরী, ভারত সহ নয়টি দেশে অনুমোদিত। দুটি শট প্রয়োজন, প্রথম ডোজের ২৮ দিন পর দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে।
২) কোভিশিল্ডঃ ভারতে ও ইংল্যান্ডে তৈরী, দুটি শট প্রয়োজন। প্রথম ডোজের ৮ – ১২ সপ্তাহ পর দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে।
৩) স্পুটনিক Vঃ রাশিয়ায় তৈরী, দুটি শট প্রয়োজন। প্রথম ডোজের আঠাশ দিন পর দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে।
দ্বিতিয় কাজ হল সাবধানতা বজায় রাখা। বাইরে বেরোনোর সময় মাস্ক অবশ্যই পরতে হবে, তিনটি স্তরের সার্জিকাল মাস্ক সবথেকে ভালো, যেকোনো ওষুধের দোকানে পাওয়ে যাবে। কারোর সঙ্গে কথা বলার সময় মাস্ক খুলবেন না। দিনে আধ ঘন্টার মত ব্যবহার করবেন তাহলে সেই মাস্ক কিছু দিন পুনরায় ব্যবহার করতে পারবেন। কিন্তু এক দিনে যদি চার-পাঁচ ঘন্টা ব্যবহার করেন তাহলে ফেলে দিতে হবে। সঙ্গে স্যানিটাইজার রাখবেন, কোনো কিছু স্পর্শ করার আগে হাতে মেখে নেবেন। বাড়ি ফিরলে সাবান দিয়ে হাত ধোবেন, যতটা সম্ভব ভীড় এড়িয়ে যাবেন। এই সামান্য কিছু কাজ যদি করতে পারেন ও আশেপাশের লোকেরা করেন তাহলেই অনেকটাই সুরক্ষিত থাকবেন।
মনে রাখবেন অযথা আতঙ্কিত হবার কারন নেই।